মায়ের বাড়িতে ফিরে এসেছে নিপু অনেক মাস হয়ে গেছে। এর মধ্যে পৃথিবীটা এক পাক ঘুরে ফেলেছে সূর্যকে। একটা কিন্ডারগার্টেনে বাচ্চাদের পড়ানো শুরু করেছে মাস চারেক হলো। আস্তে আস্তে ও জম্বি স্টেজ থেকে বেরোতে শুরু করেছে৷ প্রথম দিকের দিন গুলো ভয়ংকর রকমের ছিল। প্রিয় মানুষটা, শ্বশুরবাড়ি, এমনকি নিজের আত্মীয়স্বজন থেকে শুরু করে খাবার দাবার, নিজের যত্ন সবকিছুর সাথেই যেন অলিখিত সম্পর্কচ্ছেদ হয়ে গেল হুট করেই। দিন দিন মুখের শ্রী হারাতে লাগলো। ঝরঝর করে চুল পরতো। শুকিয়ে এতোটুকুন হয়ে জীর্ণশীর্ণ হয়ে গেল যেন নিপু৷ নিপু ফিরে আসার মাস দেড়েক পরে ওর মা নিজে গিয়ে শ্বশুর বাড়িতে রেখে আসলেন মেয়েকে। দু’দিন, ঠিক দুটো দিন ছিল সেবার মেয়েটা শ্বশুরবাড়িতে। তৃতীয় দিন দুপুর বেলা ফোন আসলো… নিপু নাকি গ্লাস প্লেট ছুড়ে ফেলছে সব। তক্ষুনি এসে তার পাগল মেয়েকে নিয়ে যাবার আদেশ করা হলো। নিপুর বাবা মন শক্ত করে মেয়েকে নিয়ে এলেন এবং স্ত্রী কে কড়া নির্দেশ দিলেন মেয়েকে ও বাড়িতে আর পাঠানোর চিন্তা মাথা থেকে ঝেটিয়ে দূর করে ফেলতে।এরপর লম্বা সময় চিকিৎসা চললো নিপুর। ধীরে ধীরে জীবনে কিছুটা স্বাভাবিকতা ফিরতে শুরু করলো। একসময় স্কুলের চাকরিটায় ঢুকে গেল মায়ের ইচ্ছা আর চেষ্টাতে। মেয়ের জীবনের চাকাটা যেভাবেই হোক আবার ট্র্যাকে ওঠাতে চাচ্ছিলেন নিপুর মা। দিনগুলো আস্তে আস্তে পরিবর্তন হতে লাগলো। শুধু নিপু ভুলে গেল ওর ও একটা কনজ্যুগাল লাইফ ছিল। ওকেও যে কেউ চোখে হারাতো! আর তার বুকেও এক সমুদ্র ভালোবাসা ছিলো মানুষটার জন্য। এতটুকু টুকু হাত, পা, আঙুল, কান, মুখ সমেত আস্ত একটা ছানা ওরও হতে পারতো। সব ভুলে গেছে নিপু। শুধু নিপুর মা ভুলতে পারেন না কিছুই। সারাদিন মেয়ের সামনে স্বাভাবিক থাকেন। এক ফোঁটা চোখের পানিও আজতক নিপু দেখেনি মায়ের। সব জমা রাখেন তিনি। রাতের অন্ধকারে জায়নামাজের পাটিতে সবটুকু কান্না সবটুকু যন্ত্রণা, উথাল পাথাল হাহাকার যেন উগরে দেন তার সৃষ্টিকর্তার কাছে। — এতো ভালো একটা সন্তান উপহার দিয়েছো আমার জীবনে ইয়া রব্ব, এতো পরিচ্ছন্ন মনের একটা মেয়ে, যে স্বেচ্ছায় কোনদিন কাউকে কষ্ট দেয়নি, কাউকে আঘাত দিয়ে একটা কথা বলেনি.. ওর এলোমেলো জীবনটাকে তুমি গুছিয়ে দাও৷ তোমার হাতেই সমস্ত কিছুর নিয়ন্ত্রণ, তোমার দেয়া পরীক্ষায় সফল হবার জন্য আমি তোমার কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করছি ইয়া রাব্বুল আ’লামীন –ফিসফিস করে তিনি আবেদন করতেই থাকেন..করতেই থাকেন, প্রায় প্রতিটি রাতে। স্বাক্ষী থাকে কেবল আরেক জোড়া নির্ঘুম চোখ। তিনি চোখের পানি, আবেগ লুকাতে সবরকম চেষ্টা করেন। শুধু মেয়ের জন্য যে বুকের ভেতর রক্তক্ষরণ হয় প্রতিমুহূর্তে সেটা থামাতে পারেন না কিছুতেই।

Great content! Keep up the good work!
Oh my goodness! Amazing article dude! Thank you, However I am having difficulties with your RSS. I don’t know the reason why I am unable to subscribe to it. Is there anybody getting the same RSS problems? Anyone that knows the solution will you kindly respond? Thanks!!